স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকায় কেউ করেনি: এম,পি (আনার)

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকায় কেউ করেনি: এম,পি (আনার)
রিয়াজ উদ্দীন (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকার মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জননেতা জনাব মোঃ আনোয়ারুল আজীম (আনার) বলেছেন, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকায় যে উন্নয়ণ করা হয়েছে তা স্বাধীনতা পরবর্তীকালে কোন সংসদ সদস্য করতে পারেনি। আগামীতে যদি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান তাহলে কালীগঞ্জকে দেশের সেরা উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এমন উন্নয়ন ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকায় কেউ করেনি: এম,পি (আনার)তরুন প্রজন্মের অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়া “দৈনিক আগামীর সময়” কে দেওয়া একান্ত স্বাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন। সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম দাবি করেন, তিনি নির্বাচিত হবার পর ঝিনাইদহ-৪ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন যা কালীগঞ্জবাসী মনে রাখবেন। আনোয়ারুল আজীম আনার ঝিনাইদহ ৪ আসন থেকে গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ১ লাখ ৩ হাজার ৪৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রার্থী  বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির মোস্তফা  আলমগীর পান ৫ হাজার ৩শ ৯৮ ভোট।
আনোয়ারুল আজীম আনার ‘আগামীর সময়’ কে বলেন, ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার ৪টি এবং কালীগঞ্জ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন মিলে ঝিনাইদহ-৪ আসনের প্রতিটি গ্রামে, জনপদে এ উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে। গত  জাতীয় সংসদে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হবার পর গত ৪ বছরে এলাকার প্রভুত উন্নয়ন হয়েছে। এমন কোন জনপদ নেই, যেখানকার কোন প্রতিষ্ঠানে উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি।  এলাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে মাহাতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজ ও নলডাঙ্গা ভূষন পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারী করন।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১ কোটি ৪০ লাখটাকা অনুদান প্রদান, কোলা ও ডাকবাংলা মসজিদে ইসলামিক পাঠাগার নির্মাণ, ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংষ্কার, ৭৫ লাখ টাকা ব্যায়ে নতুন স্কুল ভবন নির্মান, ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে মাল্টি মিডিয়ায় রুপান্তর। কেন্দ্রীয় মডেল মসজিদে ১৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দ এবং ৭৭টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। কয়েকশ শিক্ষিত বেকার যুবককে বিনামূল্যে স্থানীয় চিনিকল, পুলিশ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেয়া হয়েছে। আশ্রয়ন প্রকল্পে ১১৩ জনকে ১ একর ১৩ শতক জমি দান করা হয়েছে। তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১টি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৬টি বাসস্থান ও ২০টি পরিবারের জন্য হাইলাইজ বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে। ২২ জন দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের ৭৫ হাজার টাকা এবং ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ২৮৪ জন মুক্তিযোদ্ধাতে ভাতা দেয়া হচ্ছে।
এমপি আনার বলেন, ১৫৪ কোটি ব্যায়ে ১৮০ কিঃ মিঃ নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। ১ কোটি টাকা ব্যায়ে বিভিন্ন রাস্তা সংষ্কার করা হয়েছে। ১৮ কোটি টাকা ব্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ, বৃহত্তর খুলনা প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা ব্যায়ে ব্রীজ নির্মাণ কাজ এবং মিনি ষ্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সাড়ে ১৪ লাখ টাকা ব্যায়ে ৭৬টি বায়োগ্যাস প্লান্ট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ‘আগামীর সময়’কে আরো বলেন, এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম স্মারক বটগাছ ও গাজীকালু চম্পাবতীর মাজারের শোভা বর্ধন করা হয়েছে। সাবরেজিষ্ট্রি অফিস ভবন ও ৯টি তহসিল অফিস ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ৩টি তহসিল অফিস ইতিমধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ২১টি স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে।
তিনি বলেন, তিনি নির্বাচিত হবার পর ঝিনাইদহ-৪ সংসদীয় এলাকায় ১২৩ জন দুঃস্থ ব্যক্তিকে ৭০ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ২৫ জন দুঃস্থ মহিলাকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ২২টি সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়েছে। এলাকার ১১৯৯ জনকে মাতৃত্বভাতা, ১৩২৯ জনকে ভিজিটি কার্ড, ৩৬০ জনকে ল্যাকটেট্রিন মাদার কার্ড প্রদান করা হয়েছে। ৬৭৬৫ জনকে বয়স্ক ভাতা, ৩৩৪০ জনকে বিধবা ভাতা, ১৬২৪ জনকে প্রতিবন্ধি ভাতা, ৪ জনকে হিজরা ভাতা, ২৫ জনকে বেদে ভাতা, ১৪৫ জন প্রতিবন্ধি সন্তানকে উপবৃত্তি, ১৪৫ জন বেদে সন্তানকে উপবৃত্তি, ৭টি এতিমখানার ১৭৫ জনকে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। হাসপাতালের ১২৯ জন রোগীকে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকার সেবা দেয়া হচ্ছে। ৭৫ জন ক্যান্সার ও কিডনী রোগীকে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা সাহায্য করা হয়েছে। ৪৮০ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ৬৪ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ-৪ সংসদীয় এলাকায়  আরো যে কাজ গুলো বাস্তবায়নাধীন রয়েছে সে বিষয়ে আনার বলেন, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী চিত্রা নদী পুনঃখনন, আন্তর্জাতিক মানের মিনি স্টেডিয়াম নির্মান, ৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬টি মাদ্রাসা ভবন নির্মাণ, ডিজিটাল গ্রন্থাগার, অডিটরিয়াম, মুক্তম , বারোবাজার ফুড গোডাউন নির্মাণসহ ১০৫ কোটি টাকা ব্যায়ে কালীগঞ্জ শালিখা ও বাঘারপাড়া রাস্তা নির্মাণ, ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যায়ে কালীগঞ্জ বাজারে ব্রীজ নির্মাণ, ৫০ কোটি টাকা ব্যায়ে কালীগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরী, বাফার গোডাউন ও আবাসিক ভবন নির্মাণ, সাড়ে ৩ লাখ টাকা ব্যায়ে ৪টি মসজিদ নির্মাণের কাজ এবং ৭২ কোটি টাকা ব্যায়ে পিডিবিতে সাব ষ্টেশন নির্মাণ সহ জোনাল অফিস এবং কালীগঞ্জ ও বারোবাজার সাবষ্টেশন নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়াও ১৯৭১ সালের পর এলাকায় বিদ্যুৎ গ্রাহক ছিল ১২ হাজার। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৫০ হাজার। বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে ২টি ২০০ মেগাওয়াট সম্পন্ন ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়েছে।
এমপি আনার বলেন, তিনি নির্বাচিত হবার পর জনগনের জন্যই কাজ করেছেন। দিনে কিংবা রাতে যখন যেখানে প্রয়োজন সেখানে গেছেন। দলমত নির্বিশেষে জনগনের সাথে মিশেছেন। আগামীতে আওয়ামী লীগ থেকে  মনোয়নন পেয়ে আবার যদি নির্বাচিত হন তাহলে কালীগঞ্জ উপজেলাকে দেশের মডেল উপজেলা হিসেবে গড়তে চান।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment